সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) দুর্নীতি মামলায় চার আসামিকে দেওয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের শুনানি নিয়ে এই রুল জারি করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।
জামিন পাওয়া ওই চার আসামি হলেন- সাবেক ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফল হক, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, টাঙ্গাইলের মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা। গত ১৮ আগস্ট ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি।
আমিন উদ্দিন মানিক জানান, ফারমার্স ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে গত ১৩ আগস্ট অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তাঁদের বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত।
এ মামলায় এস কে সিনহাসহ মোট চার আসামি এখন পলাতক। বাকি তিনজন হলেন ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, সাভারের শ্রীমতী সান্ত্রী রায় (সিমি) ও শ্রী রণজিৎ চন্দ্র সাহা।
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ১১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়।
অভিযোগত্রে ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী) নাম নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামি ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক (গুলশান) মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ মারা যাওয়ায় তাঁকে এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যদের লাভবান করে অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানান্তর করে অর্জিত অপরাধলব্ধ আয় উত্তোলন, স্থানান্তর ও নিজেদের ভোগদখলে রেখে অবৈধভাবে প্রকৃত উৎস, অবস্থান গোপন করে পাচার করেছেন বা পাচারের ষড়যন্ত্রে সংঘবদ্ধভাবে সম্পৃক্ত থেকে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত ৫ জানুয়ারি এসকে সিনহাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য এই আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
গত বছরের ১০ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ মামলাটি করে দুদক। এরপর ৪ ডিসেম্বর সংস্থাটি এই মামলায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়।
Development by: webnewsdesign.com