নকল ও ভেজালকারী ব্যবসায়ীদের কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হূমায়ূন এমপি বলেন, সকল ব্যবসায়ীরা নকল ও ভেজালের সাথে যুক্ত নয়। অনেক ভালো ব্যবসায়ী আছেন যারা আন্তর্জাতিক মানের পণ্য বাজারজাত করে বিশ্ব বাজারে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। কিন্তু কিছু নকল ও ভেজালকারী ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা এ হীন কাজ করে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উচিত তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করে ব্যবসায়ী সমাজ থেকে বাদ দেওয়া।
আজ শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ের বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৩ উপলক্ষে বিএসটিআই আয়োজিত ÔMeasurements supporting the global food system’ অর্থ্যাৎ ‘পরিমাপ বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার সহায়ক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএসটিআই’র মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মোঃ আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, শিল্পসচিব জনাব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মাদ নাজমুল হক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এর সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ রায় এবং (বাজুস) এর সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর এর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা মোঃ রুহুল আমিন রাসেল। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিএটিআই’র পরিচালক (মেট্রালজি) প্রকৌশলী সাজ্জাদুল বারী।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি পণ্য যেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সমাদৃত হয় আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিএসটিআই সফলভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নকল ও ভেজালরোধে তিনি সরাসরি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে বিএসটিআই’র অভিযান পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করেন।
ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও ওজনে কম দিলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, পবিত্র রমজানসহ বছরব্যাপী বিএসটিআই ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে প্রশংসা অর্জন করেছে। বিএসটিআই’র এ অভিযান তৃণমূল পর্যায়ে পরিচালনা করতে হবে। বিএসটিআই তার কাজ করে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের উচিত বিএসটিআইকে এ কাজে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করা।
শিল্প সচিব বলেন, নকল ও ভোজালরোধে যে আইন রয়েছে তার কঠোর প্রয়োগ হলে নকল ও ভেজাল অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। সম্পদ ও জনবলের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার মানসিতা নিয়ে কাজ করে গেলে কোন কিছু কঠিন নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, খাদ্যে ভেজাল সম্ভবত বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। এরফলে নানা জটিল রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তিনি ভেজাল ও নকল প্রতিরোধে বিএসটিআই’র সক্ষমতা ও নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরকে সংশোধনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
বিএসটিআই’র উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন, বিএসটিআই’র মানচিহ্ন নকল ও অবৈধ ব্যবহার প্রতিরোধে অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত লাইসেন্স প্রদান, পণ্যের হালাল সনদ প্রদান, স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাইপূর্বক সনদ প্রদান শুরু করেছে। মাঠ পর্যায়ে বিএসটিআই’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন, নতুন জনবল সৃজন, পণ্য পরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকমানের নতুন নতুন ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং বিদ্যমান ল্যবরেটরিসমূহে নতুন নতুন পণ্য পরীক্ষণ প্যারামিটার সংযুক্তিকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।
Development by: webnewsdesign.com