ব্রেকিং

x

সরকার দেশকে শেষ করে দিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে : মির্জা ফখরুল

রবিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ | 211 বার

সরকার দেশকে শেষ করে দিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে : মির্জা ফখরুল

‘এই সরকার বাংলাদেশকে শেষ করে দিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ রবিবার দুপুরে এক আলোচনাসভায় বিএনপির মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের উদ্যোগে ‘স্বৈরাচারের পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি’ দিবস উপলক্ষে এই আলোচনাসভা হয়। নব্বই সালের ৬ ডিসেম্বর সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করেন। এ দিনটিকে বিএনপি ‘স্বৈরাচারের পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করে।

তিনি বলেন, এখন দেখেন নতুন করে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। গতকাল কুষ্টিয়ায় আমাদের বিএনপির অফিস ভাঙচুর করে আবার সন্ধ্যার পর আমাদের সাধারণ সম্পাদকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা একটা গভীর চক্রান্তের নীলনকশার অংশ। বাংলাদেশে তারা আবার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, বাংলাদেশে তারা আজকে আবারও উদোর-পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে গণতন্ত্রের সৈনিকদেরকে তারা পেছনে ফেলে দিতে চায়, নির্যাতন করতে চায়। এখন এই সময়ে যত অপকর্ম এটা আপনারা ছাড়া কে করতে পারেন-আপনারাই করতে পারেন। সেটা আপনারা তৈরি করছেন আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে আমাদের জাতিকে ত্রাণ করতে হবে, বের করে আনতে হবে। আমি অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের গ্রামের মানুষরাও কিন্তু শক্তি হারায়নি, সাহস হারায়নি। আপনি গ্রামে যাবেন, তাদের জিজ্ঞাসা করবে। সবাই বলছে যে কবে পরিবর্তন হবে, কবে ডাক আসবে? সেই ডাক আসছে। আমাদেরকে তৈরি হতে হবে। এই আবদ্ধ ঘরের মধ্যে নয়, উন্মুক্ত আকাশের মধ্যে, রাজপথে আমাদের বীর সৈনিকরা যেভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন, যেভাবে সব অন্যায়কে পরাজিত করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, অসুন্দরকে পরাজিত করে সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজকে আমাদের তরুণ জেনারেশনকে সেভাবে এগোতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী কারাগারে, আমাদের নেতা তিনি অনেক দূরে। আমরা সুর্ভাগ্য যে আমাদের নেতা (তারেক রহমান) অনেত দূরে থেকে সারাক্ষণ দলকে গড়ে তোলার জন্য, দলকে সংগঠিত করার জন্য কাজ করছেন। আর আমাদের নেত্রী এই নীরবে থেকেও, এই নীরবতায় আমাদেরকে শক্তি জোগাচ্ছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে আগামী মাসে। ফিফটি ইয়ার্স- রজতজয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছে এই সরকার। আমরাও করছি। আমাদের করা আর তাদের করার মধ্যে পার্থক্য কী? যে তারা সেই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার সেই মূল চেতনা গণতন্ত্র, তাকে যে তারা হত্যা করেছিল স্বাধীনতাযুদ্ধের পরে পরে। তারা আজকে আবার ক্ষমতায় বসে আছে। কিন্তু তারা আজকে স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী পালন করছে।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার একে একে সব কিছুকে ধ্বংস করেছে। আমাদের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং রাষ্ট্রকে এখন তারা বিপন্ন করে ফেলেছে। রাষ্ট্র তো এখন নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্যাসিনো-ফ্যাসিনো কী সমস্ত হচ্ছে। আপনার এক জায়গা থেকে কত হাজার হাজার কোটি, একটা সিন্দুক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বেরোচ্ছে। আজকের পত্রিকায়ও আছে আওয়ামী যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুর্নীতির বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলে না। কোনো দিন একসঙ্গে যায় না। আজকে আওয়ামী লীগ কিভাবে টিকে আছে সেটা আপনারা জানেন, আমি রিপিট করতে চাই না। আজকে দেশনেত্রী আজকে কারাগারে, গোটা জাতি আজকে কারাগারে। আমরা এখন যে লড়াইটা লড়ছি, সেটা শুধু আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছি না, আমরা একটা দুর্বৃত্ত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়ছি না, আমরা কবিডের বিরুদ্ধেও লড়ছি। এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের এগোতে হবে।’

পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের এম আবদুল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যফ্রন্টের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ঢাকা আইনজীবী সমিতির হোসেন আলী খান হাসান, জাসাসের অধ্যাপক মামুন আহমেদ, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক ও মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিমও বক্তব্য দেন আলোচনাসভায়।

Development by: webnewsdesign.com